সিরাজগঞ্জের বিএনপি প্রার্থী রুমানা মাহমুদ পুলিশের গুলিতে আহত

সিরাজগঞ্জ শহরে পুলিশের টিয়ারশেল ও গুলিতে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী রুমানা মাহমুদসহ অন্তত ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এসময় রুমানা মাহমুদের পিঠে, পায়ে ও হাতে এবং শহর মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেরিনার দুচোখে বুলেটের স্প্রিন্টার লাগে।

শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর থেকে ইবি রোডস্থ জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জানান, সিরাজগঞ্জ-২ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী রুমানা মাহমুদ দলীয় নেতাকর্মীরা গণসংযোগের বের হলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এক পর্যায়ে পুলিশ টিয়ারশেল ও ছড়্ড়া গুলি নিক্ষেপ করে।

পুলিশের ছোড়া গুলির কয়েকটি স্পিরিন্টার সিরাজগঞ্জ-২ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী রুমানা মাহমুদের শরীরে বিদ্ধ হয়। চিকিৎসকরা তার পিঠ, পা ও হাত থেকে বেশ কয়েকটি স্প্লিন্টার বের করেন। এছাড়া পুলিশের ছোঁড়া গুলির স্পিরিন্টারে দুই চোখে বিদ্ধ হয়েছে এক মহিলা দল নেত্রীর। এসময় জেলা ছাত্রদল সভাপতির গলায়, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ সুইটের মাথায় স্পিরিন্টার বিদ্ধ হয়।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু জানিয়েছেন, নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশে রুমানা মাহমুদের হোসেনপুরের বাসার সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে যাওয়া হবে-এমন সংবাদ পেয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে মিছিল নিয়ে গিয়ে মহড়া দিতে থাকে। বিষয়টি পুলিশকে অবগত করা হলে পুলিশ দলীয় কার্যালয়ের আশাপাশে অবস্থান নেয়।

সন্ধ্যার পর আমরা কলেজ রোড দিয়ে মিছিল নিয়ে মোড়ে যাবার পরই পুলিশ টিয়ার শেল-রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষে বাবার বুলেটের আঘাতে বিএনপি প্রার্থী রুমানা মাহমুদ আহত হয় এবং গুলি লেগে মেরিনা নামে এক মহিলা নেত্রীর দুচোখে লাগে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও দলের আরও অন্তত ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ জানান, সন্ধ্যার দিকে ইবি রোড এলাকায় পুলিশের একটি গাড়ি টহলের সময় বিনা উস্কানিতে বিএনপির লোকজন পুলিশের গাড়ীতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলে তারা আরও বেশি এগ্রেসিভ হয়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ৮টি টিয়ার শেল ও ৫৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বিএনপির ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে উপ-পরিদর্শক ফারুক সরকারসহ তিন পুলিশ সদস্যকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ ঘটনায় ২জনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পর শহরের বিএনপি অধ্যুষিত এলাকায় পুলিশ অভিযান চালায়। এলাকায় থমথমে বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

সিরাজগঞ্জ পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা ধানবান্ধি, কালিবাড়ী, আমলাপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে নৌকার পোষ্টার পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা নিজেরা নির্বাচনী মাঠে না থেকে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী প্রচারণাতেও বাধা দিচ্ছেন।